১. সহবাস করলে। স্বামী-স্ত্রীর মিলন হলে বীর্যপাত হোক বা না হোক।
২. স্বপ্নদোষ হলে। স্বপ্নের কথা স্মরণ থাকুক বা না থাকুক শরীরে, কাপড়ে বা বিছানায় বীর্যের চিহ্ন দেখতে পেলে।
৩. মহিলাদের মাসিক ঋতুস্রাব (হায়িয) বন্ধ হলে।
৪. নিফাস (সন্তান প্রসবের পার যে রক্তস্রাব হয়) বন্ধ হলে।
৫. স্ত্রী-পুরুষ কারও উত্তেজনার সাথে বীর্য বের হলে ।
তখন ফরয গোসল ছাড়া নামাজ হবে না।
উল্লেখ্য, কেউ ইসলাম গ্রহণ করলে, মুর্দাকে গোসল দিলে এবং জুমু’আর সালাতের জন্য গোসল করা সুন্নাত। (মিশকাত হাঃ ৪১৫, ৪১৯, ৪২১)।
:
গোসলের ফরজ তিনটিঃ
১. একবার কুলি করা ফরজ।
১. একবার নাকের নরম জায়গা পর্যন্ত পানি পৌঁছিয়ে পরিষ্কার করা ফরজ।
৩.সমস্ত শরীরে পানি পৌঁছানো ফরজ।
যার উপর গোসল ফরজ হয়েছে, সে যদি গোসলের একটা ফরজ বাদ দিয়ে শতবার গোসল করে, তবু তার শরীর নাপাক থেকে যাবে।
:
গোসলের সুন্নতঃ
ফরজ গোসলের সঠিক নিয়মঃ
গোসলের পদ্ধতি : গোসলের পূর্বে পেশাব করে নেওয়া উচিত।
ফরজ গোসলের জন্য-
১. গোসলের জন্য মনে মনে নিয়ত করতে হবে।
২. প্রথমে দুই হাত কব্জি পর্যন্ত ৩ বার ধৌত করতে হবে।
৩. এরপর ডানহাতে পানি নিয়ে বামহাত দিয়ে লজ্জাস্থান এবং তার আশপাশ ভালো করে ধৌত করতে হবে। শরীরের অন্য কোন জায়গায় বীর্য বা নাপাকি লেগে থাকলে সেটাও ধৌত করতে হবে।
৪. এবার বাম হাতকে ভালো করে ধৌত করতে হবে।
৫. তারপর ‘বিসমিল্লাহ’ বলে ওজুর নিয়মের মত করে ওজু করতে হবে অর্থাৎ “বিসমিল্লাহ” বলে ডান হাতে পানি নিয়ে উভয় হাতের কব্জি পর্যন্ত তিনবার ধোয়া, তিনবার কুলি করা, তিনবার নাকে পানি দিয়ে নাক ঝাড়া, কপালের গোড়া হতে দুই কানের লতি ও থুঁতনির নীচ পর্যন্ত, প্রথমে ডান হাত ও পরে বাম হাত তিনবার ধোয়া (আংগুলে আংটি থাকলে, মেয়েদের হাতে, কানে, নাকে গহনা থাকলে তা নেড়ে-চেড়ে ভিজিয়ে নেয়া, সম্পূর্ণ মাথা মাসাহ করা। তবে দুই পা ধুয়া যাবে না।
৬. অতঃপর প্রথমে মাথায় তিনবার (৩ অঞ্জলি) পানি ঢেলে চুলের গোড়ায় খিলাল করে ভালভাবে পানি পৌঁছাবে।
৭. এবার সমস্ত শরীর ধোয়ার জন্য প্রথমে ৩ বার ডানে তারপরে ৩ বার বামে পানি ঢেলে ভালোভাবে ধৌত করতে হবে, যেন শরীরের কোন অংশই বা কোন লোমও শুকনো না থাকে। গোসল এমনভাবে করতে হবে, যাতে বগল, নাভী ও কানের ছিদ্র পর্যন্ত বাহিরের পানি দ্বারা ভিঁজে যায়। অতপর আবার সমস্ত শরীরে পানি ঢালবে।
৮. সবার শেষে একটু অন্য জায়গায় সরে গিয়ে দুই পা ৩ বার ভালোভাবে ধৌত করতে হবে।
মনে রাখতে হবে
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, একদা আমি আমার এক প্রতিবেশীর জানাযাতে যোগদান করি। তার লাশ কবরে নামানোর সময় বিড়ালের ন্যায় একটি অদ্ভুত জানোয়ার কবরের ভিতরে বাইরে লম্বঝম্প করে লাশ কবরে নামাতে বাধার সৃষ্টি করতে লাগল।
সেটিকে তাড়াবার জন্য সকলে মিলে চেষ্টা করলাম। কিন্তু কোন প্রকারই দূর করা গেল না। ব্যর্থ হয়ে অন্যত্র গিয়ে কবর খনন করা হল। সেখানে গিয়ে জন্তুটি ভয়ানক উৎপাত করতে লাগল। সেটিকে মারতে গিয়েও সর্ব প্রকার চেষ্টা ব্যর্থ হল। অগত্যা বাধ্য হয়ে অন্যত্র গিয়ে তৃতীয় কবর খনন করা হল। সেখানে গিয়েও জন্তুটি আরও বেশী উপদ্রব শুরু করল।
অনন্যোপায় হয়ে আমরা তাড়াতাড়ি তৃতীয় কবরেই তাকে দাফন করতঃ সভয়ে দ্রুতপদে সেখানে হতে প্রস্থান করলাম। দাফনান্তে কবর হতে বজ্রবৎ ভীষণ এক আওয়াজ বের হয়েছিল। আমি জানার জন্য তার স্ত্রীর কাছে জিজ্ঞেস করলাম, তার স্ত্রী উত্তর দিল, সহবাসের পর তিনি ফরজ গোসলে অবহেলা করতেন। এতে তার ফজরের নামায কাযা হয়ে যেত। এছাড়া তার অন্য কোন পাপ আমি কখনো দেখি নাই।
আল্লাহ আমাদের সঠিকভাবে কুরআন ও সুন্নাহ মেনে জীবন যাপন করার তাওফিক দিক এবং পূর্বের না জেনে করা ভুল ক্ষমা করুক। আমিন।)
তথ্যসূত্র : কুরআন শরীফ, বুখারী, মুসলিম, তিরমিযী
Leave a Reply